111
thumb Captured By: জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
              • 14-09-2022   9:54 PM •      Captured By: জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী   111

জয়পুরে পুজো হয় পটের মূর্তিতে।

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- আনন্দ বাংলা ডেস্ক:- আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরই 'মা' আসছেন সপরিবারে। শুরু হতে চলেছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো।

পুজোটা খাতায় কলমে মাত্র চার দিনের হলেও প্রস্তুতি শুরু হয় অনেক আগে থেকেই এবং রেশ থেকে যায় আরও অনেক দিন। এবার তো পুজোর তাৎপর্য অনেক বেশি। ইউনেস্কো বাঙালির দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সেটা নিয়েও আর এক বিতর্ক।

সেই বিতর্ককে দূরে সরিয়ে রেখে চলছে পুজো প্রস্তুতি কোথাও ধরে রাখা হয়েছে সাবেকিয়ানাকে কোথাও বা মূর্তির মুখের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় জনপ্রিয় কোনো চিত্র শিল্পীর মুখ কোথাও সন্তানদের নিয়ে 'মা' এক পাটাতেই থাকেন, কোথাও বা পৃথকভাবে নব প্রজন্মের হাত ধরে দীর্ঘদিনের ঘরোয়া পুজোয় এসেছে অনেক পরিবর্তন কিন্তু ডিজিটাল যুগের শত পরিবর্তনও স্পর্শ করতে পারেনি পশ্চিম মঙ্গলকোটের জয়পুরের রায় বাড়ির পুজোকে এখনো তারা অতীত ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে অনেক দিন আগেকার কথা শিরিষ রায়ের হাত ধরে এখানে দুর্গাপুজো শুরু হয় একপাটায় সপরিবারে 'মা' আসেন তবে 'মা' মৃন্ময়ী নন, পটের আজও সেই ঐতিহ্য চলে আসছে আগে শিল্পী এসে রঙ-তুলি ব্যবহার করে মায়ের রূপ ফুটিয়ে তুলতেন এখন কম্পিউটার প্রিণ্ট পরিবর্তন বলতে শুধু এটুকুই পরিবারের জনৈক সদস্য বললেন - মায়ের রূপ ফুটিয়ে তোলার জন্য সবসময় শিল্পী পাওয়া যায়না তাই এই পরিবর্তনটা করতে হয়েছে অবশ্য আরও একটা ছোট পরিবর্তন হয়েছে আগে 'মা' আসতেন মাটির ঘরে সেটা এখন দালান বাড়ি হয়েছে রায় বাড়ির সদস্যরা বিশ্বাস করেন 'সবই মায়ের কৃপা' পুজোর দু'চারদিন আগে থেকেই ফুল ও আলোর মালায় সেজে ওঠে মন্দির চত্বর চড়া ডিজের পরিবর্তে চলে মিষ্টি সুরের পুরনো দিনের গান ধীরে ধীরে আত্মীয় স্বজনের ভিড় বাড়তে থাকে তৎপরতা বেড়ে ওঠে পাড়ার ছেলেদের এসব কিছুই ইঙ্গিত দেয় 'মা' আসছে সপ্তমীর দিন সকালে নিয়ম মেনে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে পাশের পুকুর থেকে নিয়ে আসা হয় ঘট এখানে বৈষ্ণব মতে পুজো হয় তাই অষ্টমীর দিন 'ছাগ' নয় বলি হয় চাল কুমড়ো দশমীর দিন ঘট বিসর্জনের আগে বিবাহিতা থেকে অবিবাহিতা প্রত্যেকেই মেতে ওঠে সিঁদুর খেলায় পুজোর চিরাচরিত প্রথার সঙ্গে সঙ্গে মোটামুটি চারদিন ধরেই চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তবে শিল্পীরা সব পাড়ার ছেলেমেয়ে ফলে প্রত্যেকের মধ্যে থাকে একটা আলাদা উৎসাহ এভাবেই হাসি, ঠাট্টা, আনন্দের মধ্যে দিয়ে কেটে যায় পুজোর দিনগুলো পটের ঠাকুর হলেও আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে ঠাকুর দেখার আকর্ষণ কিন্তু একটুও কমেনি প্রতিদিন ভিড় লেগেই থাকে অনেক সময় দূরদূরান্ত থেকেও অনেকেই ঠাকুর দেখতে আসে তাদের বক্তব্য - মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি দেখা গেলেও পটের মূর্তি সহজে চোখে পড়েনা তাই এর আকর্ষণ আলাদা রায় বাড়ির অন্যতম সদস্য জয়ন্ত রায় বললেন - হয়তো আমাদের পুজোর মধ্যে নাই থিমের ছড়াছড়ি, আলোর ঝলকানি, মূর্তির মধ্যে নাই আধুনিকতা কিন্তু আছে আন্তরিকতা এটাই সম্বল করে আমরা এগিয়ে চলেছি আমাদের সৌভাগ্য পরবর্তী প্রজন্মও এটাই ধরে রেখেছে