101
thumb Captured By: জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
              • 10-10-2022   9:01 PM •      Captured By: জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী   101

পুজোর সময় অসহায়দের পাশে ওরা।

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- আনন্দ বাংলা ডেস্ক:- যার মধ্যে মানবিকতা আছে, মনুষ্যত্ব বোধ আছে তাকেই আমরা মানুষ পদবাচ্য বলে ধরে নিই। কারও কারও মধ্যে এই গুণগুলোর চরম অভাব দ্যাখা গেলেও অনেকের মধ্যে এটা দ্যাখা যায়। করোনার সময় থেকে এর পর্যাপ্ত নিদর্শন পাওয়া গ্যাছে।

বিপদের ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণ নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বহু সংস্হা। সদ্য শেষ হলো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। বড় বড় বাজেটের পুজো, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ। আলোর ঝলকানিতে ঝলসে ওঠে চোখ।

মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় উপচে পড়ছে দামি পোশাক পড়ে কোথাও সপরিবারে, কোথাও বা প্রেমিক-প্রেমিকা হাত ধরাধরি করে ঠাকুর দর্শনে বেড়িয়েছে তারপর দামি রেস্টুরেন্টে অর্ধেক খাবার খেয়ে বাকি অর্ধেক নষ্ট করা হয় সেটার ছবি তুলে সগৌরবে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবার পোস্টও করা হয় ওদিকে একদল অভুক্ত শিশু অসহায় ভাবে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে রঙিন পোশাক পড়া মানুষগুলোর দিকে পড়নে তাদের ছেঁড়া তেল চিটচিটে জামা নতুন পোশাক কিনে দেবার সামর্থ্য ওদের অভিভাবকদের নাই তার মাঝেও আদরবাসা, হেল্পিং হ্যাণ্ডস, হৃদি-পল্লব, সোল, সৌরভ গাঙ্গুলী বস অফ ইন্ডিয়া, গ্রেস এণ্ড গ্লোরি অফ গড চ্যারিটেবল সোসাইটি, খোলা জানালা, আমরা মানবিক সহ বেশ কিছু সংস্হাকে ব্যতিক্রমী ভূমিকা পালন করতে দ্যাখা যায় এদের মধ্যে কেউ কেউ নথিভুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্হা অনেকেই আবার তাও নয় অনেক সংস্হার সদস্যদের নিজস্ব আর্থিক সামর্থ্য থাকলেও কিছু তো পুরোপুরি অপরের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল প্রচারের সার্চ লাইট এদের উপর থাকেনা কারণ এদের উপর নির্ভর করে তো আর মূল স্রোতের সংবাদ মাধ্যমের টিআরপি বাড়বে না অথচ একটু প্রচার পেলে হয়তো এদের দিকে অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত দিনের শেষে লাভ হতো দুস্থদের যেমন উত্তর দমদমের আদরবাসা আমাদের খবর করার আগে আদরবাসা যার মানস কন্যা সেই অর্পিতা ইন্দ্র নিজের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে বছরে চার পাঁচটি শিশুর হাতে নতুন পোশাক তুলে দিতে পারত কিন্তু খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এখন অনেকেই তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ফলে পুজোর আগে তার পক্ষে শতাধিক শিশুর হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে এমনকি অনেক দুস্হ পুরুষ ও মহিলাও নতুন পোশাক পেয়েছে কেউ কেউ নিজের বা সন্তানের জন্মদিন ওখানকার শিশুদের সঙ্গে পালন করছে, কেউ বা মা-বাবার বাৎসরিক শ্রাদ্ধ কার্যত মহালয়ার দিন থেকে শুরু করে পুজো ক'দিন ওখানকার প্রায় ত্রিশটি শিশু একবেলা খাবার পেয়েছে 'আমরা মানবিক' তো অন্যের সাহায্যে দুই শতাধিক শিশুর হাতে নতুন পোশাক ও খাবার দিয়েছে এইভাবে এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বহু সংস্হা দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তার খবর কেউ রাখেনা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামান্য আয়ের জনৈক ব্যক্তি যিনি প্রতিবছর পুজোর সময় পাঁচটি নতুন জামা ও শীতের সময় পাঁচটি চাদর দেন তিনি বললেন - প্রতিটি পাড়ায় এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের দু'তিনটি জামা দেওয়ার ইচ্ছে হয় কিন্তু সংখ্যাটা কম বলে লজ্জায় দিতে পারেননা দশ জনের কাছে মিলিত ভাবে পাওয়া গেলে সহজেই কুড়ি পঁচিশ জন পেতে পারে তাছাড়া বড় বাজেটের পুজো কমিটি, যেসব পুজো কমিটি সরকারি সাহায্য পেয়েছে এবং প্রতিটি সরকারি কর্মচারি, উচ্চ বেতনের বেসরকারি কর্মচারি ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা এইসব সংস্হার হাতে যদি চার পাঁচটি করে নতুন পোশাক তুলে দেয় তাহলে অন্তত পুজোর সময় বহু দুস্থ শিশু ও অসহায় মানুষ নতুন পোশাক পড়তে পারবে 'আমরা মানবিক' এর কলেজ পড়ুয়া অদিতি বলল- আমাদের সংস্হাটি পাঁচজনের সাহায্য নিয়ে চলছে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে সাহায্যের হার বাড়ছে বিন্দু বিন্দু জল যদি বিশাল সিন্ধু গড়ে তুলতে পারে তাহলে সবার মিলিত অল্প অল্প সাহায্য বহু দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারে আসুন না আমরা একটু মানবিক হই