ব্যবসায়ীদের দখলে রাস্তা - অসহায় পথচারীরা।
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- আনন্দ বাংলা ডেস্ক:-ফুটপাত তুমি কার?- শিক্ষিত বা অশিক্ষিত সবার একটাই উত্তর - পথিকের এবং সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই স্বাভাবিক উত্তর আজ অস্বাভাবিকে পরিণত হয়েছে। সৌজন্যে স্হানীয় এক শ্রেণির নেতার দাদাগিরি ও অর্থের প্রতি লোভ এবং ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব।
কালনা থেকে কাটোয়া, বর্ধমান থেকে গলসী হয়ে গুসকরা, শহর বা আধা শহর - ফুটপাত দখলের গল্পটা সর্বত্র সেই একই। শুরুটা হয় অস্হায়ী কাঠামোর হাত ধরে। তারপর কখন যে সেটা স্হায়ী কাঠামো হয়ে ফুটপাত অতিক্রম করে প্রধান সড়কে নেমে আসবে ধরতেই পারা যাবেনা। এ যেন 'ছুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরিয়ে আসা'।
দুর্গাপুজো থেকে বড়দিন, চৈত্র সেল থেকে ইদ - সমস্ত ধর্মীয় উৎসবে বিষয়টি তো বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছে যায় দোকান, ফুটপাত, সড়ক - সব মিলেমিশে একাকার এ যেন এক ত্রিবেণী সঙ্গম অতিরিক্ত কিছু আয়ের আশায় গ্রামের ছোটছোট ব্যবসায়ী বা হকাররা ছুটে আসে শহরে বসে পড়ে রাস্তা দখল করে সেই সুযোগে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্থায়ী ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের সামনের দিকটা কিছুটা সম্প্রসারণ করে নেয় পরে সেটা থেকেই যায় প্রধান সড়ক ছোট হতে হতে গলি হয়ে গ্যাছে, ফুটপাত উধাও যানবাহন থেকে পথিক সবাই সমস্যায় পড়ে তারপর তাদের আর সরানো যায়না সরাতে গেলেই ঝামেলা, রাস্তা অবরোধ, সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি সামনে চলে আসবে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা যে নেতারা অর্থের বিনিময়ে তাদের বেআইনিভাবে বসার সুযোগ করে দিয়েছে তারা দু'পক্ষই বজায় রাখতে চেষ্টা করে ভোট বড় বালাই রাস্তা চুলোয় যাক, একজনের জন্য হাজার জনের অসুবিধা হলেও তাদের কিছু যায় আসেনা, অর্থের আমদানি হলেই হলো দীর্ঘদিন ধরেই এই রাজ্যে এই পরিস্থিতি চলে আসছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাটা চোখে পড়ছে ভুক্তভোগীরা বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হলেও প্রতিবাদ করার উপায় নাই অসৎ রাজনৈতিক নেতা এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠিত আক্রমণ নেমে আসে প্রতিবাদকারীর উপর সব জেনেও নীরব স্থানীয় প্রশাসন ফলে অবস্থার পরিবর্তন হয়না এইভাবে রাস্তা দখল করে ফুটপাতে বসে থাকা গুসকরায় জনৈক ব্যবসায়ী বললেন- অতিরিক্ত কিছু আয়ের আশায় এই সময় আমি প্রতিবছর আসি অন্য সময় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি চৈত্র সেলে ভিড় হয় বিক্রিও বাড়ে জানি এইভাবে রাস্তা দখল করে বসে থাকাটা অন্যায় কথা হচ্ছিল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে তিনি বললেন - লোকসংখ্যা বাড়ছে কিন্তু জায়গা তো বাড়ছেনা এরসঙ্গে আছে অনুপ্রবেশ এদিকে বেকার সংখ্যা বেড়েই চলেছে ফলে একটু আয়ের আশায় যে যেখানে সুযোগ পাচ্ছে জায়গা দখল করে বসে যাচ্ছে এদিকে মানবিকতার খাতিরে অনেক সময় কিছু বলা যায়না আর যাইহোক তারা তো চুরি করছেনা তবে সাধারণ মানুষের চলাচলের যাতে খুব সমস্যা নাহয় সেদিকে তাদের লক্ষ্য রাখা উচিৎ