16
thumb Captured By: নীহারিকা মুখার্জ্জী
              • 01-03-2024   11:40 PM •      Captured By: নীহারিকা মুখার্জ্জী   16

মরণোত্তর চক্ষুদানের প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হলো হরিপালের প্রবীণের।

নীহারিকা মুখার্জ্জী, হরিপাল, হুগলি -: জন্মগত চোখের ত্রুটি নিয়ে অনেকেই জন্ম গ্রহণ করেন। কেউবা পরবর্তীকালে বিভিন্ন কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। পৃথিবীর রূপ বা প্রিয়জনের মুখ দেখার আগেই অনেকেই একরাশ আফসোস নিয়ে না-ফেরার দেশে চলে যান।

অথচ সময়মতো কর্ণিয়া পেলে বহু মানুষ হয়তো পৃথিবীর রূপ যেমন উপভোগ করতে পারতেন তেমনি মনভরে প্রিয়জনের মুখ দর্শন করতে পারতেন। এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির চক্ষুর কর্ণিয়া অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। কিন্তু প্রচারের অভাব ও ধর্মীয় কুসংস্কারের জন্য অনেক সময় মানুষ চক্ষুদান করতে ভয় পায়। অনেকেই আবার ইচ্ছে থাকলেও নিকটবর্তী হাসপাতালে পরিকাঠামো না থাকায় চক্ষুদান করার সুযোগ পায়না।

কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সৌজন্যে বহু দৃষ্টিহীন মানুষ পৃথিবীর রূপ ও প্রিয়জনের মুখ দর্শন করার সুযোগ পেয়েছে এরকম দুটি সংস্থা হলো হরিপালের 'এসো বন্ধু হই' ও 'রাজবলহাট কালচারাল সার্কেল' ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন মৃত ব্যক্তির কর্ণিয়া তারা সংগ্রহ করে দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরে পেতে সাহায্য করেছে গত ২৮ শে ফেব্রুয়ারি রাত ১০.৩৫ নাগাদ হরিপালের কৃষ্ণপুর নিবাসী ৯৩ বছরের বৃদ্ধ জলধর পাল না-ফেরার দেশে পাড়ি দেন এর আগেই তিনি মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করেন সেই অঙ্গীকারের কথা মাথায় রেখে ১০.৩৯ নাগাদ উনার ভ্রাতুষ্পুত্র জয়দেব পাল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'এসো বন্ধু হই'-এর অন্যতম সদস্য অন্বয় দের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি যোগাযোগ করেন সহযোগী সংস্থা 'রাজবলহাট কালচারাল সার্কেল' এর সুরজিৎ শীলের সঙ্গে নিজের মাতৃহারা কিশোরী কন্যা স্পন্দিতাকে একাকী বাড়িতে রেখে মাঝ রাতেই কর্তব্যের টানে অন্বয় বাবু নিজ সংস্থার অনির্বাণ ভট্টাচার্য, দেবাশীষ দে ও গৌতম সাহা এবং সহযোগী সংস্থার সুরজিৎ শীল ও তার টিমের সদস্যদের নিয়ে ছুটে যান জলধর বাবুর কৃষ্ণপুরের বাড়িতে প্রায় রাত ১২ নাগাদ জলধর বাবুর অমূল্য কর্ণিয়া দুটি সংগ্রহ করা হয় কলকাতা মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিভাগের হাতে কর্ণিয়া দুটি তুলে দেওয়ার ওই রাতেই 'রাজবলহাট কালচারাল সার্কেল'-এর এক সদস্য কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন 'এসো বন্ধু হই' স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে 'পাল' পরিবারের সদস্য বাসুদেব পাল, রবীন পাল, সঞ্জয় পাল, জয়দেব পালদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে অন্বয় বাবু বললেন - উনারা সময়মত খবর দেওয়ার জন্য কর্ণিয়া দুটি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে এরফলে অন্তত দু'জন মানুষ পৃথিবীর রূপ উপভোগ করার সুযোগ পাবে পাশাপাশি তিনি ধন্যবাদ জানান 'রাজবলহাট কালচারাল সার্কেল'-এর সকল সদস্যদের তিনি বলেন - ওদের জন্যেই আমরা এই কঠিন কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছি একইসঙ্গে এলাকাবাসীর কাছে মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে ও মরণোত্তর চক্ষুদান করতে আহ্বান জানান