বগটুই গ্রামে শুরু হল বিনামূল্যে কোচিং ক্লাস

আশিস মণ্ডল,:রামপুরহাট: ৭ এপ্রিল : স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে হবে বগটুই গ্রামকে। সেই লক্ষ্যে, মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে শুরু হল কোচিং ক্লাস। প্রথম দিনে কিচিং ক্লাসে হাজির হয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক নিখিল কুমার সিনহা।

চলতি বছরের ২১ মার্চ। বোমা এবং আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল ১০ জনের। এই হত্যালীলা সাড়া দেশের মানুষের মনকে নাড়া দিয়েছিল। গ্রামছাড়া হয়েছিলেন বহু পরিবার।

একদিকে পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের গাড়ির ধুলো, অন্যদিকে চামড়া পোড়া গন্ধ বগটুই গ্রামের আকাশ বাতাসকে বিষয়ে তুলেছিল সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার ছেদ পড়েছিল পড়াশোনা বন্ধ করে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল পড়ুয়ারা সেই গ্রামকেই স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে উদ্যোগী হলেন তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি প্রাথমিক ভাবে উচ্চমাধ্যমিকের পড়ুয়াদের পরীক্ষার তাদের গ্রাম থেকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় সেখান থেকেই বাসে করে তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয় এবার গ্রামের মাধ্যমিক - উচ্চমাধ্যমিকের পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দিতে গ্রামেই শুরু করা হল কোচিং ক্লাস শুরুতেই কোচিং ক্লাসে ২০ জন পড়ুয়া অংশগ্রহণ করেছিল উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক নিখিল কুমার সিনহা, রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মল্লিকা হালদার সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকা নিখিলবাবু বলেন, "একদিকে দু'বছর ধরে করোনা অতিমারি ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ভীত নড়বড়ে করে দিয়েছে তারপর বগটুই গ্রামের এই মর্মান্তিক ঘটনা পড়ুয়াদের মনে খারাপ প্রভাব পড়েছে পড়ুয়াদের মন থেকে ভয়াবহ স্মৃতি মুছে ফেলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতেই বন্ধু জিম্মির অনুরোধে গ্রামে এসেছি আমরা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলে ওদের কোথায় কোথায় দুর্বলতা রয়েছে জানার চেষ্টা করছি সেই দুর্বলতা কাটাতেই আমরা শিক্ষক শিক্ষিকারা এসেছি শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ায় আমাদের মূল লক্ষ্য" মল্লিকা হালদার বলেন, "বগটুই কাণ্ডের পর ছেলেমেয়েদের মনে ভীতি সঞ্চার হয়েছে সেই ভীতি কাটাতেই আমরা এখানে এসেছি আমরা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বললাম কোথায় দুর্বলতা আছে সেটা জানার চেষ্টা করলাম সন্ধানও করার চেষ্টা করলাম" সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী এবং জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে গ্রামে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আমরা প্রথমে উচ্চমাধ্যমিকের ছেলেমেয়েদের শহরে রেখে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছিলাম এবার গ্রামেই কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থা করলাম কারণ এখনও মেয়েরা গ্রামের বাইরে গিয়ে কোচিং নিতে সাহস পাচ্ছে না তাই কিছু শিক্ষককে গ্রামে গিয়ে কোচিং দেওয়ার ব্যবস্থা করা হল আমাদের ডেকে বেশ কিছু শিক্ষক শিক্ষিকা এগিয়ে আসায় আমরা খুশি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা এলাহী শেখের বাড়িতে নিয়মিত কোচিং দেওয়া হবে প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকরা কোচিং দেবেন" এই উদ্যোগে খুশি পড়ুয়ারাও তারা জানান, ঘটনার পর থেকেই গ্রামের বাইরে যাওয়া আমাদের বন্ধ হয়ে গিয়েছে ফলে গৃহশিক্ষকের কাছে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল খুব অসহায় বোধ করছিলাম গ্রামে কোচিং সেন্টার করে দেওয়া আমাদের অনেক উপকার হবে