রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার হাওড়া জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ভাঙচুর ও চিকিৎসক মারধরের ঘটনা।
রাজীব মুখার্জি:হাওড়া:চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে হাওড়া হাসপাতালের ডাক্তারদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে মৃতের ছেলের বিরুদ্ধে। মৃত কার্তিক দে (৪৫) লিলুয়া পটুয়াপাড়া পাড়ার বাসিন্দা বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় মৃতের ছেলে রোহিত দে লে গ্রেফতার করে হাওড়া থানার পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে কার্তিক দে (৪৫) প্রায়শই অসুস্থ থাকতেন। তার কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন বলে দিন কয়েক আগে তাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল রাতে তার মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ চিকিৎসার গাফিলতির কারণেই বিনা চিকিৎসাতে মারা গেছে।
ঘটনার সময় মৃতের ছেলে বারবার ডাক্তারদের ডাকলেও কেউ আসে নি বেশ কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার নবারুণ মজুমদার কার্তিক দে কে দেখতে এলে তাকে মৃত ঘোষণা করে এরপরই রাগে মৃতের ছেলে ডাক্তারকে মারধর করে বলে অভিযোগ ওই চিকিৎসক হাতে গভীর চোট পায় তার এক্সরে করে জানা যায় যে তার ডান হাতের হাড় খুলে গেছে তিনি অসুস্থ হওয়ার কারণে হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এই ঘটনায় ডাক্তার মহলের দাবি তাদের সুরক্ষার জন্য কোন রকম ব্যবস্থা না থাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে মৃত্যু রোগীর স্ত্রী জানান কাল রাত তিনি হাসপাতালে ছিলেন কিছুক্ষণের জন্য তিনি নিচে নামেন তখন তার বড় ছেলে রোহিত রোহিত কে বাবার কাছে থাকতে বলেন তিনি সে সময় হঠাৎ তার স্বামীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ার কারণে ছেলে বারবার সেখানে কর্মরত চিকিৎসককে রোগীকে দেখার জন্য অনুরোধ করে কিন্তু তারা একবারও কেউ এসে রোগীর কাছে দেখতে চান নি চিকিৎসককে বারবার বলার পরেও কেউ না আসায় কিছুক্ষণের মধ্যেই তার চোখের সামনে তার বাবা মারা যায় মারা যাওয়ার পর সে কান্না ভেঙ্গে পরেও চিৎকার করে ওঠে তখন ডাক্তাররা এসে জানান যে তিনি তাঁর রোগী মারা গেছে বাবা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সেখানে থাকা একটি মেশিন মাটিতে ফেলে ভেঙে দেয় এই কথাও স্বীকার করেন রোহিতের মা তারপরে তার মায়ের অভিযোগ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা মিলে তার ছেলেকে বেধড়ক মারধর করেন ও পুলিশের হাতে তুলে দেয় এরপর খবর পেয়ে যখন হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে তিনি যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন সেখানে কর্তব্যরত সিকিউরিটি আটকে দেয় তাকে লিফটেই আটকে রাখা হয় তিনি তার চোখের সামনে দেখেন পুলিশ তার ছেলেকে ধরে নিয়ে চলে যাছে ধৃতকে আজ হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হয় তাদের দাবি যে তার ছেলেকে ছেড়ে দেয়া হোক পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন যে আর্থিক অসঙ্গতির কারণেই তারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন তবে সেখানে চিকিৎসকরা চিকিৎসার পরিষেবা সঠিকভাবে দেন না গতকাল রাত্রে যখন বারংবার তার ছেলে চিকিৎসককে দেখেছেন তিনি না এসে নিজের রুমে বসে সময় কাটাচ্ছিলেন যদিও গতকাল রাত্রের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অরূপ রায় বলেন যেকোনো মৃত্যু দুঃখজনক তিনি আরও বলেন এই ঘটনা ঘটেছে যেখানে চিকিৎসা করার সময় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনার পর তার ছেলের বিরুদ্ধে হাসপাতালে ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে ও আজ রবিবার হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হবে যদিও চিকিৎসা দেয়ার জন্য চিকিৎসকরা সব সময় প্রস্তুত রয়েছেন মনে কিছু সময় কিছু ক্ষেত্রে ডায়ালাইসিস রোগীদের মৃত্যু হয় যদিও সব জায়গাতে সর্বদা পুলিশের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় না চিকিৎসকরা তাদের চিকিৎসা করবেন এর পাশাপাশি তিনি আরো জানান হাসপাতালের যে ক্ষতি হয়েছে তা স্বাস্থ্য দপ্তর তথা রাজ্য সরকার দেখবে যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান যে তারা রাত্রিবেলা হঠাৎ একটি আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন ওই ওয়ার্ডে এরপর দেখেন যে মারধর করার ঘটনা ঘটছে এরপর তারা এসে মারপিট থামান পরে পুলিশ চলে আসে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে গোটা ঘটনায় হাসপাতালে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে