142
thumb Captured By: রাজীব মুখার্জি
              • 15-04-2022   9:24 PM •      Captured By: রাজীব মুখার্জি   142

রজনীগন্ধাও আজকে গন্ধ বিহীন। পয়লা বৈশাখে বাজার ছেয়েছে কৃত্রিম ফুল।

রাজিব মুখার্জি: হাওড়া:"এক গোছা রজনীগন্ধা হাতে দিয়ে বোললাম, চোললাম,"- বাংলা গানের এই কলি আজও বাঙালির মনে চির স্মরণীয় হয়ে আছে। তবে যদি সে গোলাপ কৃত্রিম হয়। তাহলে তাতে থাকে না প্রকৃতির রূপ,রস ও গন্ধ।

এখন ফুলের বাজারে পুজো পার্বন এলেই ছুটতেই হয় বাঙালিকে। যাদের বাড়িতে নিত্য ঈশ্বর সেবা হয় সেই পুজোতেও আসল ফুলের প্রয়োজন থাকেই। তবে নববর্ষের দিনে হালখাতার পুজোতে ফুল তো চাইই চাই। যদিও এই পুজো পার্বনের বিশেষ দিন গুলোতে ফুলের চাহিদা যেমন থাকে তেমনি ফুলের দামও হয় বেশ চড়া।

তবু প্রয়োজনের তাগিদে চড়া দামেই ফুল কিনতে হয় সাধারণ মানুষকে তার জন্য বাজেটে ফুলের পরিমান কাটছাঁট করে সাধারণ মানুষ তবে পুজো পার্বন বাদ দিয়ে সেভাবে চাহিদা থাকছে না আসল ফুলের সেখানে থাবা বসিয়েছে কৃত্রিম ফুল ঘর সাজানো থেকে শুরু করে বিয়েতে বরের গাড়ি সবেতেই এখন একচেটিয়া আধিপত্য করেছে এই কৃত্রিম ফুল এখন বহু বাড়িতেও ঠাকুরের গলাতেও ঝোলে এই কৃত্রিম ফুলের মালা আসলে প্রাকৃতিক ফুলের চড়া দামের সঙ্গে পাল্লা না দিতে পেরে পকেট বান্ধব কৃত্রিম ফুলকেই বেছে নিয়েছে আম বাঙালি তাই নববর্ষের দিনেও প্রাকৃতিক ফুলের চেয়ে কৃত্রিম ফুলের চাহিদা বেশি ও বিক্রিও বেশি এমনটাই জানাচ্ছেন ফুল ব্যবসায়ী প্রদীপ কুমার মাইতি তিনি বলেন আগে প্রাকৃতিক ফুলের বাজার খুব ভালো ছিলো তিনি মূলত যে সময়ে যার চাহিদা বেশি সেই জিনিষ এনেই বিক্রি করেন তবে সারা বছরই তিনি ফুল বিক্রি করেন কৃত্রিম ফুলের চাহিদা ভীষণ বেড়েছে বাড়ি সাজানোর জন্য অনেক মানুষ ব্যবহার করছেন তিনি ঠাট্টা করে বলেন এখনকার প্রাকৃতিক রজনীগন্ধার কোনো গন্ধই নেই আগে এক থোকা রজনীগন্ধা বাড়িতে নিয়ে গেলে সাতদিন তার গন্ধ থাকতো এখন টেনেটুনে একদিন মাত্র চলে এখন বাজারে সবই হাইব্রিড রজনীগন্ধা এখন শুধু বিয়ে বাড়ি ও পুজো ছাড়া প্রাকৃতিক ফুলের আর বাজার হয় না এমনটাই জানান প্রদীপ বাবু পাশাপাশি তিনি দাবি করেন কৃত্রিম ফুলের বাজার এইটাই বেড়েছে আগে তিনি দোকানে অল্প ওই ফুল আনতেন এখন পরিবহন ভাড়া দিয়ে প্রচুর সংখ্যায় কৃত্রিম ফুল আনছেন তিনি আক্ষেপ করে বলেন হাইব্রিড চাষের কারণে ১৫ দিনে ফোটা ফুল এখন একদিনে ফুটিয়ে দিচ্ছে যার কোনো গন্ধ নেই তাই ওই ফুল দাম দিয়ে কেনার থেকে কৃত্রিম ফুল মানুষ বেশি পছন্দ করছে একটা কৃত্রিম ফুলের মালা ব্যবহার করলে এক বছর নিশ্চিন্ত এমনটাই দাবি করছেন তিনি এই কৃত্রিম ফুল দিয়ে সাজালে তার জৌলুশ অনেক বেশি যেটা প্রাকৃতিক ফুল দিয়ে সেই জৌলুশ আসে না বলেই দাবি করেন তিনি যাদের অনেক অর্থ আছে তারা পয়সা খরচ করে প্রাকৃতিক ফুল দিয়ে সাজায় কিছুক্ষণ বাদে সেই ফুল মূর্ছে গেলেও তাদের কিছু যায় আসে না তবে মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে তা করা সম্ভব নয় তাই মানুষ কৃত্রিম ফুল ব্যবহার করছে সাজানোর জন্য অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলে আবার তা গুটিয়ে রেখে দিচ্ছে অন্য কোনো অনুষ্ঠানে আবার তা ব্যবহার করবে বলে আরেক ফুল ব্যবসায়ী বাবুলসোনা ভট্টাচার্য দাবি করেন নববর্ষের দিনেও কৃত্রিম ফুলের চাহিদা বেশি তবে আগে যখন কৃত্রিম ফুল সেভাবে আসে নি বাজারে তখন প্রাকৃতিক ফুলের ভীষণ চাহিদা ছিল যা এখন আর নেই প্রাকৃতিক ফুল ব্যবহার করলে দিনের দিন করতে হয় কিন্তু কৃত্রিম ফুল অনেক দিন থেকে যায় তাই মানুষ ওই ফুল ব্যবহার করছেন বলেই দাবি করেন তিনি পাশাপাশি প্রাকৃতিক ফুলের সাজানোর জৌলুশ কৃত্রিম ফুলের সাজানোর চেয়ে কম বলেই কৃত্রিম ফুল ব্যবহার অনেক বেড়েছে এখন ফুলের ক্রেতা শশবিন্দু ঘোষ বলেন আসলে কৃত্রিম ফুল প্রাকৃতিক ফুলের থেকে বেশি স্থায়ী ব্যবহার করার পরে আবার তাকে ধুয়ে ব্যবহার করা যায় পাশাপাশি যে কোনো অনুষ্ঠানে সাজানোর জন্য প্রাকৃতিক ফুল খুবই ব্যয় সাপেক্ষ সেই জায়গাতে কৃত্রিম ফুলের দাম কম ও টেকশই তা চলেও দীর্ঘদিন আর তার জৌলুসও বজায় থাকে দীর্ঘদিন ধরে তাই কৃত্রিম ফুলের বাজার অনেক বেড়েছে তবে পুজো হোক বা হালখাতা এতে প্রাকৃতিক ফুলের চলই এখনো চলে আসছে তবে হয়ত কোনোদিন নিত্য পুজো থেকে শুরু করে বিভিন্ন পুজো পার্বনে তবে কি থাবা বসাবে এই কৃত্রিম ফুল হালখাতার মতো নববর্ষের পুজোর অনুষ্ঠানেও কৃত্রিম ফুল তার আধিপত্য বিস্তার করবে কিনা এর উত্তর দেবে সময়