163
thumb Captured By: রাজীব মুখার্জি
              • 16-04-2022   9:12 PM •      Captured By: রাজীব মুখার্জি   163

রেলের কামরাতে শৌচাগার তৈরির ইতিহাস। মজার ঘটনা সেই ইতিহাসের পেছনে।

রাজিব মুখার্জি:হাওড়া:এক সময় বাঙালিরা দেশকে পথ দেখাতো এটি একটি প্রচলিত প্রবাদ। রেলের শৌচাগার তৈরির ইতিহাসে রয়েছে এক বাঙালিরই অবদান। তার জন্যই ভারতীয় রেলে ট্রেনের কামরাতে তৈরি হয়েছিল শৌচাগার।

যদিও ঘটনাটি বেশ মজার। সেই ইতিহাস হয়ত আজকে বাঙালি বিস্মৃত হয়েছে। তবু সেই ইতিহাস রক্ষিত আছে ভারতীয় রেলের প্রধান ভবনে। তখন হাওড়া থেকে কলকাতা পারাপারের জন্য পন্টুন ব্রিজ সদ্য তৈরী হয়েছে।

পাশাপাশি ১৯০৬ খৃষ্টাব্দে হাওড়া স্টেশনের পুরনো গুমটি ভেঙ্গে নতুন স্টেশনের উদ্বোধনও হয়ে গেছে এর তিন বছর পর ১৯০৯ সালে অখিল চন্দ্র সেন নামে এক যাত্রী নিদারুণ গরমের সময় প্যাসেঞ্জার ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন আগের দিন কাঁঠালের অনেক কোয়া খেয়ে ফেলেছিলেন তিনি সকাল থেকেই পেটের মধ্যে অস্বস্তি হচ্ছিল তার তাও কাজে যাওয়াটা জরুরি ছিল তার তাই ওই অস্বস্তি নিয়েই উঠে পড়েন ট্রেনে একে ট্রেনের কামরাতে ভ্যাপসা গরম আর পেটের অস্বস্তি নিয়ে জেরবার হয়ে উঠেছিলেন তিনি এরই মধ্যে মাঝে মাঝে পেটে তীব্র বেগ অনুভব করতে শুরু করলেন ট্রেন বোলপুর স্টেশন পেরিয়ে যাওয়ার পরে আর তার পক্ষে পায়খানার বেগ সামলানো সম্ভব হয় নি আহমেদপুর স্টেশনে ট্রেন থামলে তিনি ট্রেন থেকে নেমে টয়লেটের উদ্যেশ্যে ছুট দেন টয়লেটে নিজেকে হালকা করে নেন হালকা হয়ে বেরতে না বেরতেই গার্ড বাঁশী বাজিয়ে ট্রেন ছাড়ার সিগন্যাল দিয়ে দেন তিনি ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে দেখে হাতের লোটা ও ধুতি হাতে ধরেই ট্রেনের পেছনে ছুট দেন কিন্তু ততক্ষণে ট্রেন গতি নিয়ে নেওয়াতে ট্রেনে উঠতে পারলেন না বরং বেসামাল হয়ে প্লাটফর্মে পড়ে যান অখিল বাবুকে ছাড়াই ট্রেন স্টেশন ছেড়ে চলে যায়তার ওই অবস্থা দেখে প্লাটফর্মে ট্রেনের জন্য অপেক্ষামান যাত্রীরা নিজেদের মধ্যে হাঁসাহাসি শুরু করেন এতে তার সম্মানহানি হয়েছে বলেই তিনি মনে করেন আর তাই এই অভিজ্ঞতায় ক্ষিপ্ত হয়ে অখিল বাবু রেলের সাহেবগঞ্জ ডিভিশনাল অফিসে একটি অভিযোগ পত্র পাঠান ওই চিঠিতে তিনি লিখলেন মহাশয়, আমি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে আহমেদপুর স্টেশনে পৌঁছেছি কাঁঠাল খেয়ে আমার পেট ফুলে রয়েছে আমাকে পায়খানায় যেতে হল ঠিক আমি যখন কর্মটি সারছি, গার্ড হুইসিল বাজিয়ে ট্রেনকে যেতে দিল এবং আমি একহাতে লোটা অন্য হাতে ধুতি নিয়ে ছুটছি আমি পড়ে গেলাম প্লাটফর্মে দাঁড়ানো নারী ও পুরুষ আমাকে দেখে লজ্জিত হল আমি আহমেদ পুর স্টেশনে পড়ে রইলাম এটা খুব খারাপ কাজ হয়েছে যদি কোন যাত্রী বিষ্ঠা ফেলতে যায় গার্ড কি তার জন্য পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করতে পারে না? তাই হুজুর আমার প্রার্থনা এই যে যাত্রীদের স্বার্থে ওই গার্ডটির মোটারকম জরিমানা করা হোক অন্যথায় আমি সংবাদ পত্রে অভিযোগ জানাব আপনার বিশ্বস্থ দাস অখিল চন্দ্র সেন অখিল চন্দ্র সেনের এই অভিযোগ পত্রটি পাওয়ার পরে ভারতীয় রেল বোর্ড যাত্রীদের সুবিধার জন্য ট্রেনের কামরাতে শৌচাগারের ব্যবস্থা করে আর তার লেখা সেই চিঠি দিল্লীতে ভারতীয় রেলওয়ে মিউজিয়ামে প্রদর্শনের জন্য রক্ষিত আছে অখিল সেনের ওই চিঠিটি ট্রেনের কামরায় শৌচাগার চালু করার সূচনা চিঠি ছিল বর্তমানে ১৬৬ বছরের পুরনো হাওড়া স্টেশনটির প্ল্যাটফর্ম সংখ্যা ২৩ ও ট্র্যাক বা রেল পথ ২৬টি প্লাটফর্ম ১ - ১৪ পুরনো টার্মিনালের অন্তর্গত ১৭-২৩ নতুন টার্মিনালের অন্তর্গত