103
thumb Captured By: রাজিব মুখার্জি
              • 22-04-2022   6:30 PM •      Captured By: রাজিব মুখার্জি   103

ব্যয়ের চেয়ে আমদানি কম। বকেয়া কর্মচারীদের বেতন। ফের বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় হুগলি নদী ফেরি পরিবহন পরিষেবা ।

রাজিব মুখার্জি: হাওড়া:কোভিডের জেরে লকডাউনে কোমর ভেঙে গেছিল এই সংস্থার। সংস্থার তহবিল থেকেই বিনা আয়েই মাসের পর মাস বেতন দিতে হয়েছে। এরপর ফের তহবিলে টান পরে ও পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের পরিবহন দফতরের হস্তক্ষেপে তখনকার মতো সমস্যা মিটলেও অর্থনৈতিক সমস্যা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না হুগলি নদী ফেরি পরিবহনের।

সংস্থার অর্থনৈতিক দৈনতার জন্য বকেয়া হয়ে গেছে কর্মচারীদের বেতন। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না লঞ্চ ও জেটির। আশঙ্কার মেঘ এতটাই যে ফের বন্ধ হয়ে যেতে পারে হাওড়া কলকাতার মধ্যে পরিবহন হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই হুগলি নদী ফেরি পরিবহন পরিষেবা । ১৯৭০ সালে এই পরিষেবা শুরু হয় প্রধানত বাণিজ্যের কাজের জন্য দূর দূরান্ত থেকে আসা মানুষদের প্রয়োজন ।

তবে বর্তমানে এই ফেরি পরিষেবা একটি আবশ্যক পরিবহন বাংলার মানুষের জন্য হাওড়া থেকে বাগবাজার, বিবাদী বাগ, আর্মেনিয়ান, চাঁদপাল বাউরিয়া থেকে বজবজ চাঁদপাল থেকে শিবপুর ও গাদিয়াড়া থেকে নুরপুর গেঁওখালি পর্যন্ত সকল ফেরি পরিষেবা রয়েছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমন্বয় সমিতির আওতায় প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ ব্যবহার করেন এই পরিষেবা তবে কোভিদ পরিস্থিতি পরে বদলে গিয়েছে সমস্ত কিছু অল্প সংখ্যক মানুষ বর্তমানে ব্যবহার করছেন এই পরিষেবা ফলে কার্যত আর্থিক আয়ের পরিমাণ কমে গিয়েছে অনেকটাই যেখানে আগে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ ছিল ১৩ থেকে ১৪ কোটি টাকা, সেখানে কোভিদ পরিস্থিতির পরে আয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৫ থেকে ৫ কোটি টাকা আর গোদের ওপর বিষফোঁড়া, ভেসেল চালানোর জ্বালানি ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ অন্যদিকে টিকিটের মূল্য এখনো ৬ টাকায় রয়েছে যার জেরে একদিকে যেমন আয়ের পরিমাণ কমেছে, তেমন অপরদিকে বেড়ে গিয়েছে খরচ এই পরিস্থিতিতে যেমন সকল কর্মচারীদের বেতন বকেয়া পড়েছে দুমাসের তেমন অন্যদিকে অর্থের অভাবে রক্ষনাবেক্ষনের কারণে ৭টি ভেসেল ব্যবহার করা যাচ্ছে না ফলে ২৫টি ভেসেল দিয়ে সময় বাড়িয়ে পরিষেবা চালানো হচ্ছে কোনরকমে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে একটা সময় মুখ থুবরে পড়বে শতাব্দী প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যের এই জলপথ পরিবহন পরিষেবা এখন কর্মীরাও তাকিয়ে আছেন রাজ্য সরকারের প্রতি যদি সরকার এই সংস্থাকে বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় কিনা সংস্থার কর্মী বাদল দাস বলেন দীর্ঘ ২৫ বছর তিনি এখানে চাকরি করছেন শেষ মাইনে পেয়েছেন ফেব্রুয়ারি মাসে দুই মাস ধরে মাইনে হচ্ছে না বোনাস হয় নি পাশাপাশি মাইনেও বাড়ে নি যারা দৈনিক তিনশো টাকা রোজে কাজ করে তারাও পয়সা পাচ্ছে না তিনি জানান কোভিডের তিন বছরে সংস্থার ভাঁড়ার শূন্য হয়ে গেছে মুখ্যমন্ত্রী চার কোটি টাকা দিয়েছিলেন সেটাও শেষ হয়ে গেছে একদিকে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে পাশাপাশি বেড়েছে তেলের দাম সংস্থা লোকসানে চলার জন্য তাদের মাইনেও হচ্ছে না সংস্থার প্রশাসক অসিত কুমার বিশ্বাস জানান কোভিডের আগে ১৫-২০ মিনিট অন্তর পরিষেবা দেওয়া হত এখন তা আধঘন্টার ব্যবধানে চলছে যদিও তিনি দাবি করেন লঞ্চের সংখ্যা একই আছে এখনও এই ব্যবধান বেড়েছে কারণ যাত্রী সংখ্যা কম এখন তাই ফাঁকা লঞ্চ চালিয়ে লাভ হচ্ছে না সংস্থার কোভিডের আগে প্রতি ১৫ মিনিটের মধ্যেই যাত্রীতে ভরে যেত লঞ্চ ছোট বড় লঞ্চ মিলিয়ে এখন ২৫ টা চললেও কোভিডের আগে তার সংখ্যা ছিল ৩২ টি তিনি জানান মোট ১০ টি রুটে লঞ্চ পরিষেবা বর্তমানে চলছে তিনি দাবি করে বলেন বর্তমানে পরিষেবা দিতে দৈনিক যা খরচ রয়েছে তার থেকে আমদানি কমই হচ্ছে তার জেরেই বর্তমানে লোকসানে চলছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমিতি এই লোকসান কাটিয়ে ফের লাভের মুখ দেখতে পাবে কিনা তাই এখন বড় প্রশ্ন সংস্থার কর্মীদের কাছে আগামীদিনে সংস্থার ভবিষ্যৎ কি দাঁড়াবে তার দিকেই তাকিয়ে আছেন কর্মীরা